বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ❙ ৫ আশ্বিন ১৪৩০

হুমকি মোকাবেলায় সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

এসবিনিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের পবিত্র সংবিধান এবং সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় দেশ মাতৃকার বিরুদ্ধে যে কোন অভ্যন্তরীণ বা বাইরের হুমকি মোকাবেলায় সর্বদা ঐক্যবদ্ধ এবং সদাপ্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘পবিত্র সংবিধান এবং দেশমাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ কিংবা বাহ্যিক যে কোন হুমকি মোকাবিলায় সদাপ্রস্তুত থাকতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার (৩মার্চ) সকালে রাজশাহী সেনানিবাসের শহীদ কর্ণেল আনিস প্যারেড গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ ইনফেন্ট্রি রেজিমেন্টের ৭ম, ৮ম, ৯ম এবং ১০ম রেজিমেন্ট ন্যাশনাল স্টোন্ডার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
তিনি ইনফেন্ট্রি রেজিমেন্টের সংশ্লিষ্ট ইউনিট কমান্ডারগণের নিকট জাতীয় পতাকা হস্তান্তরের মাধ্যমে তাদেরকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান করেন।
মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়।
প্রধানমন্ত্রী একটি খোলা জিপে করে প্যারেড পরিদর্শন এবং সালাম গ্রহণ করেন। এ সময় সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
সেনা সদস্যদের দেশের সম্পদ এবং দেশের মানুষের ভরসা ও বিশ্বাসের মূর্তপ্রতীক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাদেরকে পেশাদারিত্বের কাক্সিক্ষত মান অর্জনের জন্য দক্ষ, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সৎ এবং মঙ্গলময় জীবনের অধিকারী হবারও আহবান জানান।
জনগণের সেবা করার জন্য সেনাবাহিনীকে তাঁর সরকার সব সময় পাশে পেয়েছে উল্লেখ করে বর্তমান সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনার সময়ে যখনই প্রয়োজন হবে তখনই সেনাবাহিনী জনগণের পাশে এসে দাঁড়াবে মর্মে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে দেশের গণতান্ত্রিক ধারা সমুন্নত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
সেজন্য তিনি সেনাসদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে চতুর্থবারের মত এবং একটানা তৃতীয়বার সরকার গঠন করার সুযোগ করে দেয়ায় দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
তাঁর সরকার সবসময় শাসক হিসেবে নয় জনগণের সেবক হিসেবেই দেশ পরিচালনা করতে চায় বলেও এ সময় উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার শাসক হিসেবে নয়, জনগণের সেবক হিসেবে দেশ পরিচালনা করতে চায়।’
একটি আধুনিক ও চৌকস সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে তাঁর সরকার বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এজন্য ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ প্রণয়ন করে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’
‘এর আওতায় সেনাবাহিনীতে নতুন নতুন পদাতিক ডিভিশন, ব্রিগেড, ইউনিট ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা সেনাবাহিনীতে তিনটি নতুন ডিভিশন প্রতিষ্ঠা করেছি,’ বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার প্রথমবারের মত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড গঠন করেছে। দেশের আকাশ প্রতিরক্ষাকে আরও সুসংহত করতে সংযোজিত হয়েছে এমএলআরএস এবং মিসাইল রেজিমেন্ট।
তিনি বলেন,‘অত্যাধুনিক বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র, হেলিকপ্টার, আর্টিলারি গান এবং মর্ডান ইনফ্যান্ট্রি গেজেট ইত্যাদি সংযোজন করে সেনাবাহিনীর আভিযানিক সক্ষমতাকে বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান, রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর-রহমান, রাজশাহী জেলা প্রশাসক এসএম আব্দুল কাদের, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি এম খুরশীদ হোসেন, রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বজলার রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহীন আক্তার রেনী প্রমুখ।
এছাড়া ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড (জাতীয় পতাকা) প্রদান অনুষ্ঠানে সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রোববার (৩ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে করে রাজশাহী পৌঁছান। বেলা পৌনে ১২টায় তিনি রাজশাহী সেনানিবাসের শহীদ কর্নেল আনিস প্যারেড গ্রাউন্ডে আসেন। পরে প্যারেড পরিদর্শন করেন। এরপর সেনাপ্রধানকে সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক এক করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৭, ৮, ৯ এবং ১০ বীর’র ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড (জাতীয় পতাকা) প্রদান করেন।

Related posts