
স্টাফ রিপোর্টার: খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছেন, প্রাকৃতিক সম্পদ নদী-খাল ছিল বাংলাদেশের গর্ব। কিন্তু নদীমাতৃক বাংলাদেশ সেই গর্ব এখন আর নেই। লবনাক্ততা প্রতিরোধে অপরিকল্পিত ভেড়িবাধ নির্মাণ, চিংড়ি চাষ ইত্যাদি কারণে নদী ও খালসমূহের স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হয়ে ইতোমধ্যে অনেক নদী ও খাল বিলীন হয়ে গেছে। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পরিবেশগত অবস্থা মোকাবেলার জন্য গবেষণার মাধ্যমে টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা ও লবনাক্ততা দূর করার উপায় বের করতে হবে। আগামী প্রজন্মের জন্য বসবাসযোগ্য উপযুক্ত পরিবেশ বিনির্মাণে তিনি সকলকে আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালনের আহবান জানান।
সিটি মেয়র বুধবার (১৩মার্চ) নগরীর সিএসএস আভা সেন্টারে ‘‘সাবন্যাশনাল কনসালটেশন অন সাসটেইন্যাবল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ইন ওয়াটার লগড এন্ড স্যালাইন প্রোন এরিয়া’’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় জাতিসংঘের ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও) দু’দিন ব্যাপী এ কর্মশালার আয়োজন করে।
সিটি মেয়র এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক গৃহীত বাস্তবসম্মত কয়েকটি উদ্যোগের বিষয় তুলে ধরে বলেন, ড্রেজারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম ক্রয় করা হয়েছে এবং প্রাইভেট সেক্টরকেও এ কাজে উৎসাহিত করা হয়েছে। মোংলা বন্দর সংলগ্ন নদীর পানি প্রবাহ সচল রাখতে ৮৩টি খাল চিিহ্নত করা হয়েছে এবং তা খননের জন্য টাকাও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আজকের সেমিনারের মাধ্যমে এ অঞ্চলের জলাবদ্ধতার সমস্যা চিহ্নিত করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারলে জলবদ্ধতা নিরসনে সুফল পাওয়া যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
পরিবেশ অধিদপ্তর-খুলনার পরিচালক হাবিবুল হক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় গবেষণা পত্রের তথ্য উপাত্ত তুলে ধরেন এফএও’র সিনিয়র এ্যাডভাইজার এবং সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো: সহিদুজ্জামান।
গবেষণা পত্রে বলা হয় ১৯৭৩ সালে এ অঞ্চলের ৬ হাজার ২’শ ১০ হেক্টর জমি জলাবদ্ধতার কবলে ছিল। ২০১৬ সালে তা ৭ গুণ বেড়ে দাড়িয়েছে ৪৭ হাজার ১’শ ৪৩ হেক্টরে। শুধুমাত্র খুলনায় ১৯৮৯ সালে ৪ হাজার ৮’শ ৫৩ হেক্টর জমিতে আমন ও বোরো চাষ হতো। জলাবদ্ধতার কারণে ২০১৫ সলে আমান ও বোরো চাষযোগ্য জমির পরিমাণ দাড়িছেয়ে ৭০৯ হেক্টর। কারণ হিসেবে উল্লেখ করে হয়েছে জলাবদ্ধতা, চিত্রা ও মধুমতি ভরাট হয়ে পানি প্রবাহ কমে যাওয়া যা আরো ঘনিভুত হয়ে খুলনার পরিবেশগত বিপর্যয় টেনে আনবে। লবনাক্ততা এবং জলাবদ্ধতা মোকাবেলায় কি কি করণীয় আছে এবং কিভাবে তা দূরীভুত করা যাবে কর্মশালায় তা নির্ধারণের চেষ্টা করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিগণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।