
এসবিনিউজ ডেস্ক : ক্যালিফোর্নিয়ার এক ভূতুড়ে শহর শেরো গর্ডোর। স্প্যানিশ ভাষায় শেরো গর্ডোর মানে সমতল পাহাড়। এই পাহাড়েই এক সময় ছিল ক্যালিফোর্নিয়ার সবচেয়ে বড়ো রুপার খনি। বহু শতাব্দী ধরে এখানে মানুষের বসবাস নেই বললেই চলে। তবে গত ২২ বছর ধরে এই সমতল পাহাড়ে একাই রয়েছেন রবার্ট লুইস ডেমারাইস নামের এক ব্যক্তি। ডেমারাইস ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক, ক্লাসে পড়ানোর ফাঁকে ফাঁকে এখানকার বিভিন্ন গুহায় রুপার খনির অনুসন্ধান চালাতেন। কিন্তু এক সময়ে স্থায়ীভাবেই এখানে বসবাস শুরু করেন ডেমারাইস। এখানে থাকার তার একমাত্র উদ্দেশ হচ্ছে পাথরের খাঁজে লুকিয়ে থাকা রুপা খুঁজে বের করা।
রুপার লোভে খালি হাতে কেবল হাতুড়ি, বাটাল আর শাবল দিয়ে ৮০০ ফুট পর্যন্ত খুঁড়েছেন। আশা একটাই—একদিন তিনি ঠিকই রুপার খোঁজ পাবেন। এখন পর্যন্ত যে কিছুই পাননি বিষয়টি তেমন না। বিভিন্ন সময়ে পেয়েছেন রুপার টুকরো। তাও নেহায়েত কম নয়, এক ঠেলাগাড়ি পরিমাণ। ছোটো ছোটো রুপার যে টুকরোগুলো পেয়েছেন সেগুলো তিনি বিক্রি করেন বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে। ছোটো ছোটো টুকরোগুলো পাঁচ ডলার থেকে সর্বোচ্চ ২০ ডলার পর্যন্ত দামে বিক্রি করেন।প্রথম যখন তিনি এই শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে আসেন তখন এখানে সেখানে কয়েক বছর কাটিয়ে দেওয়ার পর ডেমারাইসকে একজন থাকতে দেন পাহাড়ের উঁচুতে একটি পরিত্যক্ত কেবিনে। সেটি ছিল উইলিয়াম হান্টার নামে এক খনি শ্রমিকের বাড়ি। বাড়িটা এত উঁচুতে যে, সেখান থেকে পুরো শহরটা দেখা যায়। উচ্চতার জন্য ডেমারাইসের স্ত্রী তাকে ছেড়ে নেভাদা চলে গেছেন। তবে শেরো গর্ডোতে যারা বেড়াতে আসেন, তাদের বেশ আগ্রহ নিয়েই চারপাশ ঘুরিয়ে দেখান ডেমারাইস। এমনকি পর্যটকদের তিনি খনির ভেতরেও নিয়ে যেতে আগ্রহী। কিন্তু শহরের মালিক লস এ্যাঞ্জেলসের ব্যবসায়ী ব্রেন্ট আন্ডারউড এবং জন বায়ের তাকে কখনোই সে অনুমতি দেন না। নতুন মালিকেরা তাকে নিযুক্ত করেছেন মূলত শহরের কেয়ারটেকার হিসেবে। রুপার লোভে পাহাড়ের জন্তু-জানোয়ার, সেখানকার অনিশ্চিত জীবন কিংবা পরিবার সবকিছুই তার কাছে তুচ্ছ হয়ে উঠেছে।-বিবিসি