বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ❙ ৬ আশ্বিন ১৪৩০

মনোবল হারাবেন না, চিকিৎসক-নার্সদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী

এসবিনিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে সামনের কাতারে থেকে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিসাসেবা প্রদানে জড়িত চিকিসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে দেশবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, চিকিসক, নার্সসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীগণ সম্পদের সীমাবদ্ধতা এবং মৃত্যু ঝুঁকি উপেক্ষা করে একেবারে সামনের কাতারে থেকে করোনাভাইরাস-আক্রান্ত রোগীদের চিকিসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আপনাদের পেশাটাই এ রকম চ্যালেঞ্জের। এই ক্রান্তিকালে মনোবল হারাবেন না। গোটা দেশবাসী আপনাদের পাশে রয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে করোনারোগীদের সেবায় নিয়োজিতদের সরকার থেকে নানা প্রণোদনা প্রদানের কথা পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দেশবাসীর পক্ষ থেকে আপনাদের (চিকিসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী) সকলকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। যে সব সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী প্রত্যক্ষভাবে করোনাভাইরাস রোগীদের নিয়ে কাজ করছেন ইতোমধ্যেই তাঁদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছি। তাঁদের বিশেষ সম্মানী দেওয়া হবে। এ জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চিকিসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সশস্ত্র বাহিনী ও বিজিবি সদস্য এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মচারীর জন্য বীমার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দায়িত্ব পালনকালে যদি কেউ আক্রান্ত হন, তাহলে পদমর্যাদা অনুযায়ী প্রত্যেকের জন্য থাকছে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকার স্বাস্থ্যবীমা এবং মৃত্যুর ক্ষেত্রে এর পরিমাণ ৫ গুণ বৃদ্ধি পাবে। স্বাস্থ্যবীমা ও জীবনবীমা বাবদ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৭৫০ কোটি টাকা।

প্রধানমন্ত্রী সবাইকে আশ্বস্ত করে বলেন, সুরক্ষা সরঞ্জামের কোন ঘাটতি নেই। নিজেকে সুরক্ষিত রেখে স্বাস্থ্যকর্মীগণ সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাবেন- এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা। একইসঙ্গে সাধারণ রোগীরা যাতে কোনভাবেই চিকিসাসেবা থেকে বঞ্চিত না হন, সেদিকে নজর রাখার জন্য আমি প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে নিয়োজিত পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যবৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তা, মিডিয়া কর্মী, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী আনা-নেওয়ার কাজে এবং মৃত ব্যক্তির দাফন ও সকারের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মীগণসহ জরুরি সেবা কাজে যাঁরা নিয়োজিত রয়েছেন, তাঁদেরকেও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইসের কারণে গোটা বিশ্ব আজ অর্থনৈতিক মন্দার সম্মুখীন হতে যাচ্ছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থা আভাস দিচ্ছে। এই রোগ প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে কোয়ারেন্টিন বা সঙ্গনিরোধ। অর্থা নিজেকে ঘরবন্দি করে রাখা। বিশ্বের ২৫০ কোটিরও বেশি মানুষ আজ ঘরবন্দি। কোথাও লকডাউন, কোথাও গণছুটি আবার কোথাও কার্ফিউ জারি করে মানুষকে ঘরবন্দি করা হয়েছে। বাংলাদেশেও গত ২৫-এ মার্চ থেকে ২৫-এ এপ্রিল পর্যন্ত একটানা ৩২ দিন সাধারণ ছুটি বলব হয়েছে। জরুরি সেবা কার্যক্রম ছাড়া সবকিছু বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালি বীরের জাতি। অতীতে নানা দুর্যোগ-দুর্বিপাকে বাঙালি জাতি সাহসের সঙ্গে সেগুলো মোকাবিলা করেছে। বিজয়ী জাতি আমরা। আমরা সস্মিলিতভাবে করোনাভাইরাসজনিত মহামারীকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবো, ইনশাআল্লাহ। নতুন বছরে মহান আল্লাহর কাছে কায়মনবাক্যে প্রার্থনা, মহামারীর এই প্রলয় দ্রুত থেমে যাক। আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

 

 

Related posts