স্টাফ রিপোর্টার: ‘বৈশ্বিক উন্নয়নে জাতিসংঘের ভূমিকা: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেছেন, বিশ্ব বাস্তবতায় জাতিসংঘকে অধিকতর কার্যকরী ভূমিকা পালনের জন্য ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা প্রয়োজন। সে নিরিখে নিরাপত্তা পরিষদসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার প্রয়োজন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ৫ সদস্য ভেটোর নামে যে ক্ষমতা আরোপ করছে তা অগণতান্ত্রিক ও বৈষম্যমূলক। এ পদ্ধতির অবসান দরকার।
সোমবার(২৮জানুয়ারি)খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে
জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান, ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা এবং আইন ডিসিপ্লিনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ সেমিনারে উপাচার্য এ কথা বলেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন আইন ডিসিপ্লিনের প্রধান প্রফেসর ড. মোঃ ওয়ালিউল হাসানাত।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার যে মহতি উদ্যোগ নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠা হয় তা বিগত সময়ে অনেক ক্ষেত্রে আশাব্যঞ্জক ভূমিকা পালন করলেও বিশ্বের কয়েকটি দেশের হাতে এবং বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র একক কর্তৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠা বা অধিকতর ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠার পর বিশ্বে ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে।
সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা সমস্যাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাতিসংঘ কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারছে না বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্ববাস্তবতায় কয়েকটি প্রভাবশালী রাষ্ট্রের স্বার্থের কারণে মানবতা ভুলুণ্ঠিত হলেও তাদের ভূমিকা হতাশাব্যঞ্জক। এমনকি আঞ্চলিক স্বার্থের কারণে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমাদের সুপ্রতিবেশি ভারতের কাছ থেকেও প্রত্যাশিত ভূমিকা পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, তবে এটা ঠিক যে জেন্ডার ইস্যুতে, শিশুদের সুরক্ষায়, নারী-পুরুষের বৈষম্য বিলোপে, নারীর ক্ষমতায়নে, হিউম্যান রাইটস প্রতিষ্ঠা, খাদ্য, আবাসনসহ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবেলা, দুর্যোগ-দুর্বিপাকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাতিসংঘ এখন অনেক ব্যাপ্তিশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন খুলনাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন অফিসের সহকারী হাইকমিশনার রাজেশ কুমার রায়না, ট্রেজারার প্রফেসর সাধন রঞ্জন ঘোষ, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কান্তি বালা, অতিক্তি জেলা প্রশাসক মোঃ ইকবাল হোসেন এবং ইউনিসেফের আঞ্চলিক মাঠ প্রধান মোঃ কফিল উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য দেন ডিভেলপমেন্ট স্টাডিজ ডিসিপ্লিন প্রধান কাজী হুমায়ুন কবীর।
উদ্বোধনী পর্বের পর টেকনিক্যাল সেশনে সভাপতিত্ব করেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। টেকনিক্যাল সেশনে তিনটি পেপার পাওয়ার পয়েন্টে উপাস্থাপন করেন যথাক্রমে সমাজবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের প্রধান প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুল জববার, ডিভেলপমেন্ট স্টাডিজ ডিসিপ্লিন প্রধান কাজী হুমায়ুন কবীর এবং আইন ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক তালুকদার রাসেল মাহমুদ।
সেমিনারে খুলনার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, প্রশাসন, তথ্য অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডিন, সমাজবিজ্ঞান, ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা এবং আইন ডিসিপ্লিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ অংশ নেন।
সেমিনারের আগে খুবি উপাচার্যের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বরে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করা হয়।
