বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩ ❙ ৯ চৈত্র ১৪২৯

ভাস্কর্য বিরোধিতা: রাষ্ট্রদ্রোহের দুই মামলার তদন্তে পিবিআই

এসবিনিউজ ডেস্ক: বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনে হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক দলের বিরোধিতার প্রতিবাদে শনিবার ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনে হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক দলের বিরোধিতার প্রতিবাদে শনিবার ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
জাতির জনকের ভাস্কর্যের বিরোধিতা করে বক্তব্য দেওয়ায় হেফাজতে ইসলামের নেতা জুনাইদ বাবুনগরী, মামুনুল হক এবং সৈয়দ ফয়জুল
করিমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালতে।
সোমবার দুই মামলার বাদীর জবানবন্দি শুনে ঢাকার মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার অভিযোগ তদন্ত করে ৭ জানুয়ারির মধ্যে পিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
এর মধ্যে একটি মামলা করেছেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। দণ্ডবিধির ১২০ (খ) (১)/১২৪ (ক)/ ৫০৫ (ক) ধারায় করা এ মামলায় হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরী, খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মামুনুল হক এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করিমকে আসামি করা হয়েছে।
দ্বিতীয় মামলাটি করেছেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট মশিউর মালেক। দণ্ডবিধির ১২০ (খ)/১৫৩/১২৪ (ক)/ ধারার এ মামলায় আসামি করা হয়েছে কেবল মামুনুল হককে, যিনি হেফাজতে ইসলামের নতুন কমিটিতে যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্বে আছেন।
বুলবুলের মামলার আর্জিতে বলা হয়েছে, ইসলামকে ‘ঢাল হিসেবে ব্যবহার’ করে আসামিরা ধর্মের ‘আজগুবি’ ব্যাখ্যা দিয়ে ‘বিদ্বেষপূর্ণ, কাল্পনিক, উত্তেজনাকর ও উসকানিমূলক’ বক্তব্য দিচ্ছেন। তারা বাঙালি মুসলমান সমাজের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও সংবিধান সম্পর্কে ‘বিদ্বেষ সৃষ্টি করে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে রাষ্ট্রদ্রোহমূলক’ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছেন।
আর মশিউর মালেকের মামলার আর্জিতে বলা হয়েছে, মামুনুল হক এক আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ‘ভেঙে ফেলার হুমকি দেন’, যা দেশ ও সরকারের স্থিতিশীলতাকে ‘হুমকির মুখে’ ফেলে দিয়েছে।
গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার গেণ্ডারিয়ার ধূপখোলার মাঠে ‘তৌহিদী জনতা ঐক্যপরিষদের’ ব্যানারে এক সমাবেশ থেকে মুজিববর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করা হয়।
একই দিনে রাজধানীর বিএমএ অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে শানে রিসালাত কনফারেন্সে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা মামুনুল হক প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করেন।
এরপর গত ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এক মাহফিলে অংশ নিয়ে হেফাজতে ইসলামের আমীর জুনাইদ বাবুনগরী হুমকি দেন, যে কোনো দল ভাস্কর্য বসালে তা ‘টেনে হিঁচড়ে ফেলে দেওয়া’ হবে।
তাদের এ ধরনের বক্তব্যের প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যেই শুক্রবার গভীর রাতে কুষ্টিয়া শহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি নির্মাণাধীন ভাস্কর্যের ভাঙচুর চালানো হয়।
এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা মো. জিশান মাহমুদ রোববার জুনাইদ বাবুনগরী ও মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আরেকটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন।

Related posts