
স্টাফ রিপোর্টার: উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে খুলনার ৯টি উপজেলার মধ্যে ৮টি উপজেলায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে রোববার (৩১মার্চ) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৯ উপজেলার মধ্যে ডুমুরিয়া উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত হয়েছে। এছাড়া ফুলতলা ও বটিয়াঘাটা উপজেলায় চেয়রম্যান পদে দু’জন বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এ দুটি উপজেলায় শুধুমাত্র ভাইস চেয়রম্যান পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বাকী ৬টি উপজেলায় সব কয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়। এর মধ্যে ৪টি উপজেলায় দ্বিমুখী এবং দুটিতে লড়াই হবে ত্রিমুখী। রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলে এমন আভাস পাওয়া গেছে। নির্বাচন নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ কম থাকলেও, ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে।
তেরখাদা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মোঃ সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মোঃ শহীদুল ইসলাম ও মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান। প্রার্থী ৩ জন থাকলেও মোস্তাফিজুর রহমান এখনও এলাকায় শক্ত অবস্থান তৈরী করতে পারেননি। বাচ্চু ও শহীদুলের পক্ষে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।
বর্তমান চেয়ারম্যান শরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু বলেন, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ২ জনের বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া ঠিক হয়নি।
শহীদুল ইসলাম বলেন, দল একজনকে মনোনয়ন দিলেও অন্য কেউ প্রার্থী হতে পারবে নাÑএমন কোনো নির্দেশনা নেতারা দেয়নি।
রূপসা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মোঃ কামাল উদ্দিন ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আলী আকবর শেখ। এর মধ্যে কামাল উদ্দিন বর্তমান চেয়ারম্যান ও আকবর সাবেক চেয়ারম্যান। দু’জনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছেন দলের নেতাকর্মীরা। এদিকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আলী আকবর শেখ গতকাল শনিবার খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলেন তার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ তুলে নির্বাচন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
রূপসা উপজেলায় জাতীয় পার্টির ফিরোজ মামুন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি’র মোঃ জহির উদ্দিন আল মামুন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী শেখ অলিউর রহমান ও স্বতন্ত্র শেখ শওকত আলী এখনও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসতে পারেননি।
দাকোপ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান এস এম আবুল হোসেনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বি দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুনসুর আলী খান। এলাকায় ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী গৌরাঙ্গ প্রসাদ রায়ের তৎপরতা অন্য ২ প্রার্থীর চেয়ে কম।
কয়রা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ২ জন। আওয়ামী লীগ মনোনীত জি এম মোহসীন রেজা ও দলের বিদ্রোহী প্রার্থী এস এম শফিকুল ইসলামের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে জানান সাধারণ মানুষ।
পাইকগাছা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত গাজী মোহাম্মদ আলী, আওয়ামী লীগের ৩ বিদ্রোহী প্রার্থী মোঃ রশীদুজ্জামান, শেখ আবুল কালাম আজাদ ও শেখ মনিরুল ইসলাম। তবে দল মনোনীত প্রার্থীকে ছাপিয়ে এ উপজেলায় আলোচনায় চলে এসেছেন শেখ মনিরুল ইসলাম ও শেখ আবুল কালাম আজাদ।
এর মধ্যে শেখ মনিরুল ইসলাম সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য শেখ মোঃ নুরুল হকের ছেলে এবং শেখ আবুল কালাম আজাদ সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। মনিরুল স্থানীয় রাজনীতিতে তার বাবার প্রভাব এবং তরুণ নেতা আজাদ নিজের ক্লিন ইমেজ কাজে লাগাতে চাইছেন। এ দুই প্রার্থীর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দিয়েছেন ভোটারা। তবে আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রশীদুজ্জামানও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসার চেষ্টা করছেন।
৯টি উপজেলার মধ্যে শুধুমাত্র দিঘলিয়ায় ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে চেয়ারম্যান পদে তিন প্রার্থী হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান খান নজরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মারুফুল ইসলাম এবং আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ মহিউদ্দিন মল্লিক।
প্রসঙ্গত, ৯টি উপজেলার মধ্যে বটিয়াঘাটা উপজেলায় আওয়ামী লীগ মনোনীত আশরাফুল আলম খান ও ফুলতলা উপজেলায় আওয়ামী লীগ মনোনীত শেখ আকরাম হোসেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। অপরদিকে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করেছে হাই কোর্ট। আজ ৩১ মার্চ ৮টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।