বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ❙ ১২ আশ্বিন ১৪৩০

আমাদের বক্তব্য ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে, বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে নয়: মামুনুল হক

এসবিনিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামীর যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান নেতা ও স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুসলিম নেতা হিসেবে পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা করি এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করি। কখনও কোনভাবেই এমন একজন প্রয়াত মরহুম জাতীয় নেতার বিরুদ্ধাচারণ করি না, করা সমীচীনও মনে করি না। তিনি বলেন, আবারও স্পষ্ট করে বলছি আমাদের বক্তব্য ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে, কোনোভাবেই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে নয়।
রোববার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, আমি আশা করব অনভিপ্রেত সব অপতৎপরতা বন্ধ হবে। একই সাথে শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক ও সৈয়দ ফজলুল করিম পীর সাহেব চরমোনাইয়ের বিরুদ্ধে কটূক্তি ও বিষোদগারে ব্যাপারে প্রশাসন যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।
মামুনুল হক বলেন, কিছুদিন ধরে ঢাকার ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের ইস্যু নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে শান্তিপ্রিয় তৌহিদী জনতা। স্বাভাবিকভাবেই ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষ কিংবা প্রাণীর ভাস্কর্য নির্মাণ অনৈসলামিক সংস্কৃতি হওয়ায় আলেম সমাজ এর প্রতিবাদ করছে। সেই সূত্রে আমিও ভাস্কর্য তথা মূর্তি নির্মাণের বিরুদ্ধাচারণ করে আমার বক্তব্য তুলে ধরেছি। কিন্তু সুকৌশলে একটি মহল ভাস্কর্য নির্মাণের এই বিরোধিতাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরোধিতা বলে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে আমার বক্তব্য দ্ব্যর্থহীন।
মামুনুল হক বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে কিছু ভুল তথ্যের ভিত্তিতে আমাকে মাহফিল করতে বাধা দেয়া হচ্ছে। সরকারদলীয় কিছু সংগঠন আমার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। আমার রাজনৈতিক ও আদর্শিক অবস্থানসহ জাতির সামনে নিজের বক্তব্য তুলে ধরা জরুরি মনে করছি। তিনি বলেন, আপনারা আমার পারিবারিক পরিচয় সম্পর্কে অবগত। আমার বাবা উপমহাদেশের প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ ও বাংলাদেশের একজন জাতীয় নেতা মরহুম শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক। যিনি চারদলীয় জোটের শীর্ষ ৪ নেতার অন্যতম একজন ছিলেন এবং তার দেয়া আদর্শিক ৫ দফার সাথে একমত হয়েই ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগ খেলাফত মজলিসের সাথে সমঝোতা চুক্তি সই করেছিল।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব বলেন, আমার বাবা ধর্মীয় ও রাজনৈতিক যুগপৎ একটি ঐতিহাসিক ধারার প্রতিনিধিত্ব করে গেছেন, যা উপমহাদেশে দেওবন্দি ধারা হিসাবে সুপরিচিত। আমিও সেই ধারারই একজন রাজনৈতিক কর্মী। বৃহত্তর সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে ইসলামের বিজয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণ সাধনই আমার রাজনৈতিক লক্ষ্য। তিনি বলেন, স্বচ্ছ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা চালানোই আমার ব্রত। কোন ষড়যন্ত্র অথবা গোপন আঁতাতের মাধ্যমে দেশ, রাষ্ট্র কিংবা সরকারবিরোধী কোনো কর্মসূচি আমাদের নেই।
মামুনুল হক বলেন, অতীতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জোটবদ্ধ রাজনীতিতে ভূমিকা রাখলেও বর্তমানে আমাদের সংগঠন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও ব্যক্তিতভাবে আমি কোন রাজনৈতিক জোটে যুক্ত নই। আমাদের এমন স্পষ্ট রাজনৈতিক অবস্থান থাকা সত্ত্বেও লক্ষ্য করছি একটি মহল ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমি ব্যক্তি মামুনুল হককে সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এজন্য জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের অমূলক ও কল্পিত অভিযোগ আমার উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। আমি এই ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

Related posts