
স্টাফ রিপোর্টার: নারী ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে খুলনায় ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স। কিন্তু এটি নির্মাণের পর কার্যত ব্যবহার হয়নি। ফলে অযতœ, অবহেলা আর ব্যবহারের অভাবে নষ্ট হচ্ছে এই কমপ্লেক্সের সব যন্ত্রপাতি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১২ সালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে খুলনা মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের উন্নয়নে ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে সুইমিং পুল, জিমনেসিয়াম নির্মান ও মাঠ সংস্কারের কাজ ছিল। ২০১৩ সালের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জিমনেসিয়াম ও সুইমিংপুল নির্মাণ সম্পন্ন হয় ২০১৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে। এরপর গত চার বছরে একবারের জন্যও ক্রীড়াবিদরা ব্যবহার করতে পারেনি সুইমিংপুল কিংবা জিমনেসিয়াম। সুইমিংপুল নির্মাণের পর প্রথমবার পানি উত্তোলনের সময় নষ্ট হয়ে যায় এর বিদ্যুৎ সাবস্টেশন।
সূত্র আরো জানায়, কয়েক দফা অভিযোগের পর গতবছর আগস্ট মাসে মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স পরিদর্শনে যান খুলনা বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া। কমপ্লেক্সের সার্বিক অবস্থা দেখে ক্ষুব্ধ হন তিনি এবং সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সুইমিংপুলসহ অন্যান্য অবকাঠামো সংস্কারের নির্দেশ দেন। এরপর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রকৌশলী পুনরায় সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। এর মধ্যে বিদ্যুতের সাবস্টেশনটি পুনরায় সংস্কার করা হয়। কিন্তু সুইমিংপুলে পানি ফিল্টারেশনের ব্যবস্থা না থাকায় ব্যবহারের অনুপযোগী ছিল। এছাড়া সুইমিং পুলের বিভিন্ন স্থানে টাইলস খুলে যাওয়ায় সেখান থেকে ময়লা বের হচ্ছিল। এগুলোও সংস্কার শুরু করে তারা। সর্বশেষ জানা গেছে, ইতিমধ্যে পানি ফিল্টারেশন ব্যবস্থা মেরামত করা হয়েছে। ফলে সুইমিংপুলের ব্যবহার উপযোগী পানি উত্তোলন করা যাচ্ছে এখন।
এদিকে একই রকম বেহাল অবস্থা জিমনেসিয়ামেরও। গত চার বছরে এখানে জিমনেসিয়ামের কোন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়নি। প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই জিমনেসিয়ামের যন্ত্রপাতি ব্যবহার না হওয়ায় তা নষ্ট হচ্ছে। জিমনেসিয়ামে উডেন ফ্লোর নির্মাণ করার কথা থাকলেও গত চার বছরে এই জিমনেসিয়ামে কোন ফ্লোর তৈরি হয়নি। তবে সম্প্রতি কোনমতে ঢালাই দিয়ে এই ফ্লোর তৈরি করা হয়েছে।
বেহাল অবস্থায় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের মাঠটিও। মাঠের একপ্রান্ত কোনরকম সমান থাকলেও অন্য প্রান্ত জঞ্জালে ভরপুর। মাঠ সমান করার কাজে ব্যবহৃত রোলারটিও কখনও ব্যবহার করা হয়নি। রোলারটি এক স্থানে পড়ে থাকতে থাকতে মাটির সাথে দেবে গেছে। দামি এই রোলারটি এখন কার্যত নস্ট।
খুলনা জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা মোঃ আলীমুজ্জামান বলেন, মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের এই দুর্দশা সত্যিই আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যের। এত বড় অবকাঠামো দিনে দিনে এভাবে নষ্ট হচ্ছে এটা ভাবতেও খারাপ লাগে।
খুলনা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক কাজী শামীম আহসান বলেন, আমরা বারবার বিভিন্ন দপ্তরে এটির সংস্কারের জন্য চিঠি দিয়েছি। মৌখিক ভাবেও বিভিন্ন ভাবে অনুরোধ করেছি। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হয়নি। এত বড় সরকারি অবকাঠামো ব্যবহার করতে না পারলে সেটি আমাদের জন্য দুঃখজনক।